top of page

ভালবাসা................

  • Writer: shahedul islam
    shahedul islam
  • Jun 16, 2017
  • 3 min read

মেয়েটির সাথে ছেলেটির সম্পর্ক আজ প্রায় ৫ বছর। ছেলেটি মেয়েটিকে একদিন একটা বারবি ডল (পুতুল) উপহার দিয়েছিল। ছোট্ট একটা কোম্পানীতে সামান্য কিছু বেতনে চাকরি করতো বিধায় ইচ্ছা থাকলেও বড় কিছু কিনে দেবার সামর্থ্য ছিল না তাঁর। ছেলেটি ভাবতো, সে যদি মেয়েটিকে বিয়ে করে তবে সারা জীবনেও তাঁকে ঐশ্বর্যের সুখ দিতে পারবে না।

হঠাৎ কোনো এক বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় মেয়েটি সেই ছেলেটির বাসার সামনে এসে হাজির। মেয়েটি বললো, আগামীকাল সন্ধ্যায় সে তাঁর মায়ের সাথে প্যারিসে চলে যাচ্ছে এবং সে কোনদিনও ফিরে আসবে না। সুতরাং তাদের সম্পর্ক আজ এখানেই শেষ। ছেলেটি কি বলবে বুঝতে পারছিল না। তবে চোখের পানি সামলে নিয়ে শুধু আস্তে করে বললো, "ঠিক আছে, যাও।" . পরদিন সন্ধ্যা... আজও গতদিনের মতো বৃষ্টি হচ্ছে। ছেলেটি এক কাপ চা হাতে বারান্দায় দাড়িঁয়ে ছিল। হঠাৎ খেয়াল করে দেখলো, দূর আকাশে একটি প্লেন ভেসে চলছে। গন্তব্য জানা না থাকলেও ছেলেটি বিড়বিড় করে আপন মনে তাঁর ভালোবাসার মানুষটিকে দূর থেকেই গুড বাই জানালো। . রাত ১টা। ছেলেটি কিছুতেই ঘুমাতে পারছে না। কয়েক ডোজ ঘুমের ওষধ খেয়ে চোখ মুখ জ্বালা করছে। তবুও তাঁর চোখে ঘুম নেই। যে মানুষটিকে ভেবে ভেবে সে প্রতি রাত পার করেছে, যাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে তাঁর প্রতিটি সকাল সন্ধ্যা হয়েছে, সেই মানুষটি তাকে ছেড়ে চলে গেছে। সে স্পষ্টই বুঝতে পারছিলো, নিজের কাছে কিছু সত্য ভালোবাসা ছাড়া আর এমন কিছুই ছিলনা, যার মাধ্যমে সে তাঁর ভালোবাসাকে আকঁড়ে রাখবে। ঐশ্বর্যের ভেতর থেকে যে মানুষ হয়েছে, সে কেন মনের আবেগে অন্ধকারে পা বাড়াবে। কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই ছেলেটি মন শক্ত করলো। যে ঐশ্বর্যের টানে মেয়েটি আজ তাঁকে ছেড়ে চলে গেল, একদিন সমপরিমাণ ঐশ্বর্য নিয়ে সে মেয়েটির সামনে হাজির হবে। . (বেশ কিছুদিন পর...) কঠোর পরিশ্রম আর নিয়তির নির্মম পরিহাসে ছেলেটি আজ অঢেল সম্পত্তির মালিক। নিজস্ব কোম্পানি আর লাখ টাকা মূল্যের গাড়ি নিয়ে সে আজ সম্পূর্ণ প্রস্তুত সেই মেয়েটির সামনে হাজির হতে। . আজও সন্ধ্যা হয়েছে। আকাশে মেঘ করে অঝোরে বৃষ্টি নামছে। ঠিক যেন সেই দিনের বৃষ্টি। যেদিন তাঁর ভালোবাসা তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো। আনমনে এসব কথা ভাবতে ভাবতে গাড়ি চালাচ্ছিল ছেলেটি। . এয়ারপোর্ট রোড, রাত ৮টা। গন্তব্য প্যারিস, সেই মেয়েটির খোঁজে। গাড়ি চালাতে চালাতে হঠাৎ সামনের রাস্তায় দুইজন মধ্যবয়সী নারী পুরুষের দিকে চোখ গেলো তাঁর। চিনতে অসুবিধা হয়নি, তারা সেই মেয়েটির বাবা মা। ইচ্ছে হচ্ছিল, কাছে গিয়ে মেয়েটির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে। কিন্তু মনের আকুলতা সামলে নিয়ে সে গাড়ির গতি কমিয়ে মেয়েটির বাবা মার পিছু পিছু যেতে লাগলো। . কিছুক্ষণ পর সে খেয়াল করলো, মেয়েটির বাবা মা একটি কবরস্থানের ভেতর ঢুকছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে ছেলেটির। গাড়ি থামিয়ে দ্রুত সে নিজেও কবরস্থানে গেলো। গিয়ে দেখতে পেল, মেয়েটির ছবি সম্বলিত একটি কবরে তাঁর বাবা মা ফুল দিচ্ছে। কবরের এক পাশে রয়েছে একটি বাক্স। . ছেলেটিকে দেখে মেয়েটির বাবা মা এগিয়ে এল। কেমন করে এসব হলো জানতে চাইলো ছেলেটি। জবাবে মেয়েটির মা বললো, "ওকে আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য প্যারিসে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ও কিছুতেই যেতে চায়নি। ও তোমার কথা বলেছিল বারবার। বলেছিল, তার ভালোবাসাকে রেখে সে কিছুতেই যেতে পারবে না। ওর আসলে ক্যান্সার হয়েছিল। ডাক্তার বলেছিল তাঁকে আর বাচাঁনো যাবে না। কিন্তু ও তোমাকে এসব বুঝতেই দেয়নি। ও কোনোদিনও তোমার হতে পারবে না, একথা জেনেই ও নিজেকে তোমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিল। আর মৃত্যুর আগে বলে গিয়েছিল, ওর ভালোবাসা অবশ্যই তোমাকে ওর কাছে ফিরিয়ে আনবে।" এরপর তারা কবরের পাশের সেই বাক্সটার দিকে দেখিয়ে বলল, সম্ভবত তোমার জন্য ওটাতে কিছু রাখা আছে। ছেলেটি বাক্স খুলে দেখে এর ভেতরে সেই বারবি ডল আর একটি চিঠি। . চিঠিতে লেখা আছে, "প্রিয়তম, আমাকে ক্ষমা করো। তোমাকে কষ্ট দেওয়ার কোনো ইচ্ছাই আমার ছিলনা। অনেক স্বপ্ন ছিল, তোমার সাথে ভালোবাসার ঘর বাঁধব। কিন্তু তা আর হলো না। আমি পর জনমেও তোমার জন্য পথ চেয়ে বসে থাকবো।" [if !supportLineBreakNewLine] [endif]


 
 
 

Comments


© 2023 by The Mountain Man. Proudly created with Wix.com

  • Black Facebook Icon
  • Black Twitter Icon
  • Black Pinterest Icon
  • Black Flickr Icon
  • Black Instagram Icon

Join our mailing list

bottom of page